গর্ভাবস্থায় ভ্রমণে প্রয়োজনীয় সতর্কতা  

ভ্রমণ কার না ভালো লাগে? কখনো প্রয়োজনে কিংবা কখনো শখের বশে হলেও অনেককে নিয়মিত ভ্রমণ করতে হয়। কিন্তু গর্ভবতী অবস্থায় ভ্রমণ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই গর্ভবতী অবস্থায় ভ্রমণে যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু বাড়তি সতর্কতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হয়।

গর্ভবতী নারীদের নিরাপদে ভ্রমণ করতে কিছু পরামর্শ-

১। ভ্রমণের পূর্বে ডাক্তার দেখান:

ভ্রমণ করার পূর্বে একজন সচেতন মা তার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন এবং ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত কিনা তা নিশ্চিত হবেন। যদি বমির অভ্যাস থাকে তবে বমি ভাব প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং ওষুধ সাথে রাখবেন।

২। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিন:

যাত্রা করার পূর্বে ভ্রমণের সময় প্রসূতি মায়েদের জন্য আরামদায়ক পোশাক এবং জুতার ব্যবস্থা করুন। অন্যান্য প্রয়োজনীয় আইটেমগুলির মধ্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ, প্রসবকালীন চার্টের একটি অনুলিপি, একটি বালিশ এবং জরুরি যোগাযোগের নাম্বারগুলো নিতে ভুলবেন না।

৩। কিছু খাবার এড়িয়ে যান:

ভ্রমণের আগে এবং চলাকালে খেলে গ্যাস হয় এমন খাবার এবং পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। নতুবা এটি অন্ত্রের গ্যাস বাড়িয়ে দিবে এবং এতে অস্বস্তিবোধ হতে পারে।

৪। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই স্টেশনে থাকুন:

ভ্রমণকালীন উদ্বেগ এবং চাপ গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বেশ ঝুঁকির হতে পারে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এয়ারপোর্ট বা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছানো ভালো। কারণ যেকোনো ধরণের তাড়াহুড়ো একজন প্রসূতি মায়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

৫। ভারি লাগেজ ওঠাবেন না:

ভ্রমণকালে কখনও কোনো প্রকার ভারি লাগেজ বা মালামাল বহন করবেন না। এটা একজন প্রসূতি মায়ের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

৬। বিমানে ভ্রমণের সময় করণীয়:

কিছু বিমান সংস্থা ৩২ সপ্তাহের বেশি গর্ভবতী মায়েদের বিমানে ভ্রমণের অনুমতি দেয় না (যেমন- এয়ার ইন্ডিয়া)। যদিও ‘ইন্ডিগো’ বা ‘স্পাইসজেটে’র মতো বিমান সংস্থাগুলি গর্ভধারণের ৩৬ সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত মায়েদের ভ্রমণের অনুমতি দেয়। তাই ভ্রমণের পূর্বে ফ্লাইটের ভ্রমণের জন্য যে নির্দেশিকা রয়েছে তা দেখে নিন।

এক্ষেত্রে, ভ্রমনকারী গর্ভবতী নারী ভ্রমণের জন্য উপযুক্ততা প্রমাণের জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক কর্তৃক প্রদত্ত অনুমতিপত্র সাথে রাখতে পারেন।

গর্ভবতী মহিলাদের সাধারণত ঘন ঘন টয়লেট হয়ে থাকে, তাই সিট বুকিং দেয়ার সময় ওয়াশরুমের কাছাকাছি একটি বিশেষ আসন বেছে নিন।

ফ্লাইটে থাকাকালে তরল খাবার খান ও পানীয় পান করুন। দীর্ঘ ভ্রমণের সময় সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালনের জন্য চিকিৎসকরা মাঝেমধ্যে একটু হাঁটাহাঁটি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

৭। গাড়িতে ভ্রমণে করণীয়:

প্রসূতি মায়েদের ক্ষেত্রে সবসময় স্বল্পকালীন ভ্রমণে প্রাধান্য দেয়া হয়। কিন্তু ভ্রমণ যদি দীর্ঘ হয় তবে রাস্তায় মাঝে-মধ্যে বিরতি নিন। দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে প্রসারিত করে রক্ত সঞ্চালনের জন্য উপযোগী করে তুলুন। যদি সিটবেল্ট ব্যবহার করেন তবে একটু উপরের দিকে বাঁধবেন যাতে এটা তলপেটে চাপ না দেয়।

৮। ট্রেনে ভ্রমণে করণীয়:

আপনার ভারি লাগেজ কিংবা মালামাল প্লাটফর্মে বহন করে আনার জন্য পোর্টার ভাড়া করুন। বিভিন্ন স্টেশনে বিরতির সময় ট্রেন হতে বারবার নামা থেকে বিরত থাকুন। সম্ভব হলে সহজে চলাচল করা যায় সেজন্য ট্রেনে ঘুমানোর উপযোগী কোনো কক্ষ ভাড়া করুন। টয়লেট ব্যবহারের সময় দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে খুবই সতর্ক থাকুন।

Share this news on:

সর্বশেষ

ফেসবুক পোস্টে এই দিনটি স্মরণ করলেন উমামা ফাতেমা Jul 01, 2025
img
শহীদ আবু সাঈদের মায়ের দোয়া নিয়ে এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শুরু Jul 01, 2025
img
‘রামায়ণ’ এর শেষের দিনে চোখের জল আটকালেন না রণবীর! Jul 01, 2025
img
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু Jul 01, 2025
img
স্বৈরাচার পতনে যাতে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয় সেই কাজ করছি : প্রধান উপদেষ্টা Jul 01, 2025
img
আগামী ৫ দিন টানা বৃষ্টির আভাস Jul 01, 2025
img
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করল পাকিস্তান Jul 01, 2025
img
সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় মব হয়েছে : মোশাররফ আহমেদ Jul 01, 2025
img
বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৩ হাজার, হাসপাতালে ২১৭ জন ভর্তি Jul 01, 2025
img
শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে মুক্তির স্বাদ দিয়েছে, জুলাই ক্যালেন্ডার উদ্বোধনে প্রধান উপদেষ্টা Jul 01, 2025
বিসিবি ছাড়ছেন সামি, জানালেন কারণ Jul 01, 2025
img
আসিফ মাহমুদের বিচার করা উচিত : নিলুফার মনি Jul 01, 2025
img
দেশের ৪ সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত Jul 01, 2025
img
ঢাকায় এবার বাংলাদেশ-নেপাল দ্বিপক্ষীয় এফওসি বৈঠক Jul 01, 2025
img
জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আমরা আদায় করে ছাড়ব: নাহিদ ইসলাম Jul 01, 2025
img
আসন্ন বিপিএল শুরু হচ্ছে কবে, জানাল বিসিবি Jul 01, 2025
img
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ Jul 01, 2025
img
১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষের ২০৩০ সালের মধ্যে অকাল মৃত্যু ঘটতে পারে Jul 01, 2025
img
ঐক্যের কোনো লক্ষণ নেই, বিভাজন আরো বাড়ছে : জিল্লুর রহমান Jul 01, 2025
img
জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা Jul 01, 2025